পাকুড়: ২৪,০০০ কোটি টাকার ব্যয়ে "ঝাড়খণ্ড উদ্যম শক্তি প্রকল্প"-এর খসড়া প্রস্তুত হয়েছে, যার লক্ষ্য ঝাড়খণ্ডকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নতুন পরিচয় দান করা। এই প্রকল্পের অধীনে রাজ্যকে মেডিকো অ্যাগ্রিকালচার হাব হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। রবিবার ফিনল্যান্ডের বিখ্যাত কোম্পানি সফ্টার সিইও সুনীল কুমার সিংহ এবং তাঁর দল শিল্পমন্ত্রী সঞ্জয় প্রসাদ যাদবের সাথে সাক্ষাত করে প্রকল্প নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
২ লক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ, অভিবাসন রোধ
সফ্টার সিইও জানিয়েছেন যে এই প্রকল্প ঝাড়খণ্ডের গ্রামীণ এলাকায় ২ লক্ষেরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। প্রকল্পের অধীনে ৫০০টি উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করা হবে, যেখানে সম্পূর্ণ কার্বন-মুক্ত কৃষিকাজ এবং AI প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। গ্রামীণ যুবক ও মহিলাদের প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে তাদের সবলীকরণ করা হবে।
ঝাড়খণ্ড সরকারের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি
শিল্পমন্ত্রী সঞ্জয় প্রসাদ যাদব প্রকল্পটিকে একটি বিপ্লবী পদক্ষেপ বলে অভিহিত করে বলেন যে ঝাড়খণ্ড সরকার রাজ্যের যুবকদের উন্নত কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রদানের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, "ঝাড়খণ্ড উদ্যম শক্তি প্রকল্প কেবল রাজ্যের অর্থনৈতিক অবস্থাকে শক্তিশালী করবে না, বরং গ্রামীণ এলাকায় সামাজিক সংস্কারও আনবে।"
মন্ত্রী এটাও আশ্বস্ত করেছেন যে প্রকল্পের জন্য জমির কোনও অভাব হবে না এবং প্রশাসনিক স্তরে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাধ্যমে এটিকে সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।
ঝাড়খণ্ড উদ্যম শক্তি প্রকল্পের বৈশিষ্ট্য
১. কেন্দ্রীয় হাব: প্রকল্পের অধীনে একটি মেগা কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ হাব তৈরি করা হবে, যাতে প্রক্রিয়াকরণ, প্যাকেজিং, সার্টিফিকেশন, গবেষণাগার, জেনেটিক ল্যাব এবং লজিস্টিক হাব ইত্যাদি সুবিধা থাকবে।
২. ৫০০ উৎপাদন কেন্দ্র: ঝাড়খণ্ডের গ্রামীণ এলাকায় ৫০০টি উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে, যেখানে ভার্টিকাল ফার্মিং এবং AI প্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নত কৃষিকাজ করা হবে।
৩. কার্বন-মুক্ত কৃষিকাজ: জমি ছাড়া কৃষিকাজ করে পরিবেশ রক্ষা করার পাশাপাশি উৎপাদনশীলতা বহুগুণ বৃদ্ধি করার লক্ষ্য রয়েছে।
৪. গ্রামীণ উন্নয়ন: প্রতিটি কেন্দ্রে কৃষক ও গ্রামীণ যুবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের আয় বৃদ্ধি নিশ্চিত করা হবে।
ইউরোপ পর্যন্ত পৌঁছাবে ঝাড়খণ্ডের উৎপাদন
সিইও সুনীল কুমার সিংহ জানিয়েছেন যে প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য ঝাড়খণ্ডের উৎপাদন সরাসরি ইউরোপীয় বাজারে পৌঁছে দেওয়া। এতে কেবল ঝাড়খণ্ডের কৃষকরা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাবে না, বরং রাজ্যের অর্থনীতিও শক্তিশালী হবে।
শীঘ্রই পরবর্তী বৈঠক
সুনীল কুমার সিংহ বলেছেন যে সরকারের ইতিবাচক মনোভাব দেখে তিনি সন্তুষ্ট। পরবর্তী বৈঠকে বিনিয়োগ নীতি, অংশীদারিত্ব মডেল এবং সম্প্রসারণ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হবে। তিনি এই প্রকল্পটিকে ঝাড়খণ্ডের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথ প্রশস্তকারী বলে অভিহিত করেছেন।
ঝাড়খণ্ড উদ্যম শক্তি প্রকল্প রাজ্যের উন্নয়নের জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে প্রমাণিত হবে। এই প্রকল্প কেবল রাজ্যের গ্রামীণ ও কৃষিক্ষেত্রে সমৃদ্ধি আনবে না, ঝাড়খণ্ডকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিচয়ও দান করবে।
Tags: ঝাড়খণ্ড উদ্যম শক্তি প্রকল্প, মেডিকো অ্যাগ্রিকালচার হাব, ২৪,০০০ কোটি বিনিয়োগ, ঝাড়খণ্ড কর্মসংস্থান, সফ্টা কোম্পানি, ভার্টিকাল ফার্মিং, ঝাড়খণ্ড সরকার
