প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে রাষ্ট্রীয় সম্মানে শেষ বিদায় জানানো হয়েছে। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী মোদী, রাহুল গান্ধী সহ অনেক বিশিষ্ট নেতা এবং বিদেশী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। "মনমোহন অমর রহে" স্লোগানের মধ্যে শেষকৃত্য নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক আরও গভীর হয়েছে।
মনমোহন সিং নিউজ: দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং-এর শনিবার দিল্লির নিগমবোধ ঘাটে রাষ্ট্রীয় সম্মানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাহুল গান্ধী সহ অনেক বিশিষ্ট নেতা উপস্থিত ছিলেন। এই সময় 'মনমোহন সিং অমর রহে' এবং 'যব তক সুরজ চাঁদ রহেগা, মনমোহন তেরা নাম রহেগা' স্লোগান শোনা যায়। অনেক বিদেশী নেতাও তাঁর শেষযাত্রায় অংশ নেন।
রাজঘাটে শেষকৃত্য না করানোর কারণে রাজনৈতিক বিতর্ক
ডঃ মনমোহন সিং-এর শেষকৃত্য রাজঘাটে না করে নিগমবোধ ঘাটে করার জন্য বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টি সহ অনেক বিরোধী দল কেন্দ্র সরকারের সমালোচনা করেছে। কংগ্রেস সাংসদ ইমরান প্রতাপগড়ী বলেন, সরকারের সংবেদনশীলতা দেখানো উচিত ছিল এবং স্মৃতিস্থলের জন্য জায়গা দেওয়া উচিত ছিল। তিনি বলেন যে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্য এটা করা হয়েছিল, তাহলে এবার কেন নয়?
আপের কেন্দ্রকে নিশানা
আম আদমি পার্টিও এই বিষয়ে সরকারের সমালোচনা করেছে। দলের প্রবীণ নেতা সঞ্জয় সিং এটিকে শিখ সমাজের অপমান বলেছেন। তিনি বলেন, ডঃ মনমোহন সিং-এর মতো মহান নেতার শেষকৃত্য রাজঘাটে হওয়া উচিত ছিল।
কংগ্রেসের দাবিতে কেন্দ্রের জবাব
কংগ্রেস প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শেষকৃত্যের জন্য দিল্লিতে যমুনা নদীর ধারে জায়গা দেওয়ার অনুরোধ করেছিল, যেখানে দেশের অন্যান্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের স্মৃতিস্থল রয়েছে। দলের দাবি ছিল যে, ডঃ মনমোহন সিং-এর শেষকৃত্য সেখানেই করা হোক এবং একটি স্মৃতিস্থলও তৈরি করা হোক। যদিও, কেন্দ্র সরকার জানিয়েছে যে, স্মৃতিস্থল নির্মাণে সময় লাগে, তাই শেষকৃত্য নিগমবোধ ঘাটেই করতে হয়েছে।
হার্টের সমস্যায় মৃত্যু
ডঃ মনমোহন সিং বৃহস্পতিবার রাতে মারা যান। ৯২ বছর বয়সী সিংকে হৃদরোগ সংক্রান্ত সমস্যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাত ৯:৫১ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুর খবরে সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ডঃ মনমোহন সিং: এক মহান নেতা
ডঃ মনমোহন সিং, যিনি অর্থনৈতিক সংস্কারের জনক হিসেবে পরিচিত, দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি আরটিআই, মনরেগা এবং শিক্ষার অধিকারের মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চালু করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে ভারতীয় রাজনীতিতে একটি যুগের অবসান হয়েছে।