মহারাষ্ট্র নির্বাচন: মারাঠা ও ওবিসি ভোট ব্যাংকের রাজনৈতিক গুরুত্ব

মহারাষ্ট্র নির্বাচন: মারাঠা ও ওবিসি ভোট ব্যাংকের রাজনৈতিক গুরুত্ব
अंतिम अपडेट: 18-01-2025

মহারাষ্ট্রে ৫২% ওবিসি ভোটার রয়েছে, যাদের প্রভাব বিদর্ভ অঞ্চলের ৬২টি বিধানসভা আসনে বিদ্যমান। অন্যদিকে, মারাঠা ভোটার সংখ্যা প্রায় ২৮%, যারা রাজ্যের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

Maharashtra Elections: মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন বাকি, আর সকল রাজনৈতিক দল তাদের প্রচারণায় পুরোদমে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। প্রতিটি দল তাদের নিজ নিজ ইস্যু তুলে ধরে জনতার কাছে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। তবে, এই সকল ইস্যুর মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু, মারাঠা সংরক্ষণ, ধীরে ধীরে উপেক্ষিত হচ্ছে। আগে একে নির্বাচনের গেম চেঞ্জার বলে মনে করা হতো, কিন্তু এখন এটি আলোচনার বাইরে চলে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এই ইস্যুর রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

মারাঠা এবং ওবিসি সংরক্ষণ

মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন ২০২৪-এর তারিখ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু, যা সকলের আলোচনায় ছিল, তা হল মারাঠা এবং ওবিসি সংরক্ষণ। তবে, নির্বাচনী প্রচারণার সময় এই ইস্যুটি ধীরে ধীরে লুকিয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, যদিও উভয় সম্প্রদায়ের ভোটারদের রাজ্যের রাজনীতিতে গভীর প্রভাব রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলি যদিও এই ইস্যুগুলি তুলে ধরে, কিন্তু তাদের নির্বাচনী কৌশলে সম্পূর্ণরূপে গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে না।

মহাজোটের পরিবর্তন

আগে মারাঠা এবং ওবিসি সংরক্ষণের সমর্থনকারী মহাজোটের কৌশল এখন পরিবর্তিত হয়েছে। বিজেপি এবং শিবসেনার একনাথ শিন্ডে গোষ্ঠী এখন "সকলকে সাথে নিয়ে চলা"-র উপর জোর দিচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘এক হলেই নিরাপদ’ ধরণের স্লোগান থেকে স্পষ্ট, মহাজোট মারাঠা এবং ওবিসি উভয় ভোট ব্যাংককেই আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে। সম্প্রতি মহাজোট প্রধান সংবাদপত্রে একটি বিজ্ঞাপনও প্রকাশ করেছে, যেখানে সকল সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করার বার্তা দেওয়া হয়েছে।

মারাঠা ভোট ব্যাংক: রাজ্যের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

মহারাষ্ট্রে মারাঠা সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক প্রভাব সবসময়ই শক্তিশালী ছিল। রাজ্যে প্রায় ২৮% মারাঠা রয়েছে এবং এই সম্প্রদায় মারাঠোয়াড়া এবং পশ্চিম মহারাষ্ট্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই এলাকাগুলিতে বিধানসভার ১১৬টি আসন রয়েছে, যেখানে মারাঠা সম্প্রদায়ের প্রভাব বিদ্যমান। ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ১৬০ জন বিধায়ক মারাঠা সম্প্রদায় থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। লোকসভা নির্বাচনেও মারাঠা প্রার্থীরা ভালো কর্মক্ষমতা দেখিয়েছেন, যা তাদের রাজনৈতিক শক্তি প্রমাণ করে।

ওবিসি ভোট ব্যাংক: রাজ্যের বৃহত্তম শ্রেণী

ওবিসি সম্প্রদায় মহারাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় ভোট ব্যাংক, যাদের সংখ্যা প্রায় ৫২%। ওবিসি ভোটারদের প্রভাব বিদর্ভ অঞ্চলে বেশি, যেখানে ৬২টি বিধানসভা আসন রয়েছে। এই শ্রেণীর সমর্থন অর্জনের জন্য প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের নিজ নিজ কৌশল তৈরি করছে। ওবিসির সাথে সাথে মারাঠা ভোট ব্যাংককে আকর্ষণ করার চেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলির জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।

ভোট বিভক্তির কারণে অনেক দল সক্রিয়

মহারাষ্ট্রে মারাঠা এবং ওবিসি উভয় ভোট ব্যাংকই বিভক্ত, আর কোনও রাজনৈতিক দলই এই দুই শ্রেণীকে সম্পূর্ণরূপে তাদের পক্ষে আনতে পারছে না। এটাই কারণ যে রাজ্যে প্রতিটি প্রধান রাজনৈতিক দল তাদের উপস্থিতি জানাতে ব্যস্ত। এনসিপি, শিবসেনা, বিজেপি, কংগ্রেস এবং অন্যান্য দল নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় সক্রিয়। এই দলগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে যাতে এই দুটি বৃহৎ ভোট ব্যাংককে তারা নিজেদের পক্ষে আনতে পারে।

মহাজোট এবং এমভিএ-র কৌশল

এই নির্বাচনে মারাঠা এবং ওবিসি ভোটারদের আকর্ষণ করার জন্য মহাজোট এবং এমভিএ উভয় জোটই তাদের কৌশল নিয়ে কাজ করছে। মহাজোটের মনোযোগ মারাঠা এবং ওবিসি উভয় শ্রেণীকে আকর্ষণ করার উপর, অন্যদিকে এমভিএ মারাঠা সংরক্ষণের দাবি সমর্থন করেছে এবং ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেছে। এর সাথে সাথে মহাজোট ধনগর জাতিকেও সমর্থন দিচ্ছে, যারা এখন অনুসূচিত জনজাতির মর্যাদা চাইছে।

উভয় শ্রেণীর সমীকরণ

মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে মারাঠা এবং ওবিসি ভোটের সমীকরণ প্রতিটি রাজনৈতিক দলের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। এই নির্বাচনী সমীকরণ রাজ্যের রাজনীতিকে সম্পূর্ণরূপে প্রভাবিত করতে পারে, কারণ এই দুটি শ্রেণীর ভোট ব্যাংকের সমর্থন যেকোন দলের জন্য নির্ণায়ক হতে পারে। নির্বাচনী প্রচারণায় এই ইস্যুগুলি নিয়ে কোনও দলই স্পষ্টভাবে কথা বলছে না, কিন্তু এই দুটি ইস্যুর প্রভাব নির্বাচনের ফলাফলে অবশ্যই পড়বে।

Leave a comment